লকডাউনে মুখ ফিরিয়েছে মনিব , দুর্ভোগে জামালপুরে আটকে পড়া পুরুলিয়ার শ্রমিকরা : একবেলা জুটছে খাবার

15th April 2020 বর্ধমান
লকডাউনে মুখ ফিরিয়েছে মনিব , দুর্ভোগে জামালপুরে আটকে পড়া পুরুলিয়ার শ্রমিকরা : একবেলা জুটছে খাবার


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( জামালপুর ) : শাক সিদ্ধ,আলু পোড়া আর ফেনভাত খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন জামালপুরে আটকে পড়া পুরুলিয়ার ১৮ জন পরিযায়ী  শ্রমিক ।লকডাউন ঘোষনা হতেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে মনিব ।পাশে দাঁড়ায়নি পঞ্চায়েতের বাবুরাও।  এই পরিস্থিতিতে  চরম বিপাকে পড়ে গিয়েছেন সুদূর  পুরুলিয়ার গ্রাম থেকে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানা এলাকায় কাজ করতে আসা  পরিযায়ী শ্রমিকরা।শাক সিদ্ধ ,আলু পোড়া আর ফেন ভাত একবেলা খেয়েই এখন তাঁরা কোন রকমে দিন কাটাচ্ছেন।এমন কষ্টের জীবন থেকে নিস্কৃতি পাবার জন্য পুরুলিয়ার পরিযায়ী  শ্রমিকরা সকলের কিছে করজোড়ে  বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দেবার আবেদন জানিয়ে চলেছেন । পুরুলিয়ার বড়ো থানার শিনটুনি গ্রামে  বাড়ি পরিযায়ী শ্রমিকদের।বরো ধান রোয়া ও আলু চাষের কাজ করার  জন্য গত মাঘ মাসে ১৮ জন পরিযায়ী শ্রমিক  চলে আসেন জামালপুর থানা এলাকায়। শ্রমিকদের  বেশিরভাগ জনই মহিলা।দুটি শিশু তাঁদের সঙ্গে রয়েছে।ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে  ১২ জন রয়েছেন আবুজহাটি ১ পঞ্চায়েতের বেজপুকুর পাড় এলাকায় । বাকি ৬ শ্রমিক রয়েছেন পাড়াতল ২ পঞ্চায়েতের বেজলা  গ্রামে । নিদারুন  কষ্টের মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা এখন দুই গ্রামের মনিব প্রহ্লাদ হাঁসদা ও শেখ সিরাজের খামারেরই দিন কাটাচ্ছেন । পরিযায়ী শ্রমিক সরলা হাঁসদা ,শান্তিমনি মুর্মু প্রমুখরা বলেন ,ক্ষেত মজুরির কাজকরে  কিছু অর্থ রোজগারের জন্য তাঁরা গত মাঘ মাসে জামালপুরের মনিবের বাড়িতে আসেন।বরো ধান রোয়া ও আলু চাষের সব কাজ শেষও হয়েগেছে ।বাড়ি রওনা হবার প্রস্তুতিও নেওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন ।তারই মধ্যে লকডাউন ঘোষনা হয়েযেতেই তাঁরা চরম বিপাকে পড়ে যান ।শান্তিমনি মুর্মু জানান  ,ক্ষেত মজুরির কাজ করে যে কটা টাকা রোজগার হয়েছিল তা এই কদিন বসে বসে খেয়েই শেষ হয়েগেছে । এখন খিদে মেটানোর জন্য অন্ন জোগাড় করাই দায় হয়ে পেড়েছে। পুরুলিয়ার বাড়িতে থাকা সন্তনরাও সমস্যায় পড়েগিয়ে শুধুই কান্নাকাটি করে চলেছে । সরলা হাঁসদা জানালেন,এই কঠিন পরিস্থিতিতে কিছু খাদ্য সামগ্রী  পাওয়া ও বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করে দেবার আবেদন  নিয়ে তাঁরা এখানকার স্থানীয় পঞ্চায়েতে দরবার করেছিলেন।কিন্তু পঞ্চায়েতের বাবুরা  তাঁদের আবেদন গ্রাহ্য না করে ফিরিয়ে দেন । দুই মনিবও এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ।এমন অসহায় পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় পুকুরপাড় থেকে তুলে আনা শাক সিদ্ধকরে ,আলুপোড়া  আর সামান্য চাল দিয়ে ফেনে ভাত রান্নাকরে একবেলা খেয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে  বলে শান্তিমনি জানালেন ।এদিকে দেশজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত রাড়ানোর কথা  মঙ্গলবার ঘোষনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। খাদ্য সামগ্রী না পাওয়া গেলে  লকডাউনের বাকি এতগুলো দিন কিভাবে কাটাবেন তার কোন কুলকিনারা করে উঠতে পারছেন এই  পরিযায়ী শ্রমিকরা।  


এই বিষয়ে জামালপুর ব্লকের বিডিও  শুভঙ্কর মজুমদার ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান বলেন ,পরিযায়ী শ্রমিকদের অসহায়তার কথা কেউ  জানায়নি। তবে বিডিও জানিয়ে দিয়েছেন ,’ওই শ্রমিকদের  কাউকে  যাতে অভুক্ত থাকতে না হয়  তার জন্য যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দেওয়া হবে । ’

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।